1. saidakon577@gmail.com : জাজিরা সময় : জাজিরা সময়
  2. info@www.jajirasomoy.com : জাজিরা সময় :
বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:২৩ অপরাহ্ন

ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া, করোনার সংক্রমণ ” বাড়ছে উদ্বেগ

জাজিরা সময়, নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত: সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

বর্ষা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে দেশে ভাইরাস জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং কোভিড-১৯-এর নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। আর এই তিন রোগের সংক্রমণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময় ভাইরাসজনিত জ্বরের জন্য সবচেয়ে সংবেদনশীল বলে ধরা হয়। এই তিন ভাইরাস মিলে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর বড় চাপ সৃষ্টি করছে। চিকিৎসা খাতের অবকাঠামো, প্রশিক্ষণ ও জনসচেতনতা না বাড়ালে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী ইত্তেফাককে বলেন, ‘এই সময়ে ছয় ধরনের জ্বর হচ্ছে। তবে তিন ধরনের জ্বর আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। ডেঙ্গু, চিকোনগুনিয়া ও করোনা। আর অন্য তিনটা জ্বর হলো—শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত জ্বর, পানিবাহিত সংক্রমণজনিক জ্বর এবং টাইফয়েড বা প্যারা টাইফয়েড জ্বর। এই তিন সংক্রমণে মধ্যম মানের জ্বর থাকে। আর ডেঙ্গু ও চিকোনগুনিয়াতে অস্থিসন্ধিতে ব্যথা হয় এবং চিকোনগুনিয়াতে ব্যথা সবচেয়ে বেশি থাকে। করোনায় আবার কাশি ও শ্বাসের টান থাকে, ডেঙ্গু ও চিকোনগুনিয়াতে কাশি বা শ্বাসের টান সাধারণত থাকে না। করোনাতে গলাব্যথা থাকতে পারে কিছুটা, চিকোনগুনিয়াতে আবার গলাব্যথা থাকে না। অন্যদিকে করোনাতে নাকে গন্ধ এবং মুখে স্বাদ না-ও পেতে পারে। কিন্তু চিকোনগুনিয়া বা ডেঙ্গুতে এটি হয় না। চিকোনগুনিয়াতে শরীরের জয়েন্টে এত বেশি ব্যথা হয় যে, অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তি নিজে হাঁটতে পারে না, কাউকে ধরে তাকে হাঁটাতে হয়। ডেঙ্গুতে ব্যথা হয় কিন্তু তীব্র ব্যথা হয় না। চিকোনগুনিয়া ও ডেঙ্গুতে রোগী প্রচণ্ড দুর্বল বোধ করে, সে তুলনায় করোনায় প্রথম দিকে দুর্বলতা কম থাকে এবং কাশি, শ্বাসের টান কম থাকে।’

চিকিৎসা: তিন দিনে কোভিডের জন্য র‍্যাপিড এন্টিজেন্ট টেস্ট, অথবা আরটি পিসিআর টেস্ট, ডেঙ্গুর জন্য প্রথম দিন এনএস-১ এনটিজেন-পরীক্ষা করতে বলি। তিন দিন পরে হলে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করতে বলি। চিকোনগুনিয়ার ক্ষেত্রে আমরা অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করাতে বলি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত ‘কনটিনিউয়িং মেডিক্যাল এডুকেশন (সিএমই)’ সেশনে দেশের ভাইরাসজনিত জ্বরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবেদ হোসেন খান তার প্রেসেন্টেশনে বলেন—‘এখন জ্বর হলেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে বাড়ছে ভাইরাসঘটিত নানা রোগ। টাইফয়েড, মৌসুমি ফ্লু কিংবা ডেঙ্গু, চিকোনগুনিয়া, করোনা—এদের উপসর্গ একে অন্যের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে। অনেক ক্ষেত্রেই পরীক্ষায় ফলাফল নেগেটিভ এলেও উপসর্গ থেকেই যাচ্ছে।’

ডা. আবেদ বলেন, ২০১৭ সালের পর ফের দেশে চিকোনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এই ভাইরাসে মৃত্যুর হার কম হলেও রোগের পর দীর্ঘমেয়াদি উপসর্গ যেমন গিঁটে ব্যথা, র‍্যাশ ও দুর্বলতা—রোগীর দৈনন্দিন জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই এটি সাধারণ জ্বর ভেবে অবহেলা করা উচিত নয়।

ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, এখন যে জ্বরগুলো হচ্ছে, এই জ্বর নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। বরং সচেতন এবং সাবধান হওয়া দরকার। কারো জ্বর হলে তিনি জ্বরের এক-দুই দিনের মধ্যে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। চিকিৎসক দু-একটি পরীক্ষা দেবেন, এরপর জ্বরের ধরন নির্ণয় করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র দেবেন। অনেকে নিজে নিজে ওষুধ খাওয়া শুরু করেন, অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করেন, যা মোটেও কাম্য নয়। এতে ভালোর চেয়ে মন্দ বেশি হতে পারে বলে জানান এই বিশেষজ্ঞ।

পরামর্শ: যেহেতু এখন ডেঙ্গু ক্রমশই বাড়ছে, আমরা বলব সবাই যেন ঘুমের সময় মশারি ব্যবহার করে এবং তারা প্রত্যেকেই যেন নিজেদের বাড়িঘর পরিচ্ছন্ন রাখেন। বিশেষ করে এডিস মশা জন্মায় এমন স্থানগুলো বা জমে থাকা পানি পরিষ্কার করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি কোনো পাড়া বা মহল্লার জনগণ একত্র হয়ে পরিচ্ছন্নতার কাজটি করেন। তাহলে ডেঙ্গু ও চিকোনগুনিয়া অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। আর করোনার ক্ষেত্রে আমরা বলব, যারই ঠাণ্ডা শুরু হোক না কেন, তিনি মাস্ক ব্যবহার করবেন এবং অন্য ব্যক্তি থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেবেন। তিনি নিজে জনবহুল এলাকায় যাবেন না। অথবা জনবহুল এলাকায় গেলেও মাস্ক ব্যবহার করবে। এছাড়া হাত ধোয়ার অভ্যাসটি আমরা পুনরায় ফিরিয়ে আনব।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট